যোগাসন শেখানো যাবে না। এই ছিল ফতোয়া। না মানার শাস্তি পেতে হল মুসলিম যোগ শিক্ষিকাকে। টেলিভিশনের সাক্ষাৎকার চলাকালীনই হামলা হল শিক্ষিকার বাড়িতে। ছোড়া হল ইট-পাটকেল। যোগ শেখানো বন্ধ না করা হলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হল রাঁচির রাফিয়া নাজকে।
যোগগুরু রামদেব সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে এলে তাঁর সঙ্গে একই মঞ্চে যোগাসন শিখিয়েছেন রাফিয়া। যোগা শিক্ষিকা হিসেবে বেশ নাম রয়েছে তাঁর। কিন্তু কিছুদিন আগেই রাফিয়া জানান, যোগাসন শেখানো থামাতে তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছেন মুসলিম সমাজেরই একাংশ। হুমকি দেওয়া হচ্ছে, অবিলম্বে যোগাসন শেখানো বন্ধ না করলে তাঁকে হত্যা করা হবে। মহিলাদের যোগাসন শেখানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম, এই দাবিতে রাফিয়ার বিরুদ্ধে জারি হয় ফতোয়া।
ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিলেন রাফিয়া। এ নিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই লাইভ ভিডিওর মাধ্যমের চ্যাট শোয়ে অংশ নিয়েছিলেন। বাড়ি থেকেই শোয়ে নিজের ভয়ের কথা জানাচ্ছিলেন। যা ভয়ঙ্কর সত্যিতে পরিণত হয়। একদল মানুষ এসে হামলা চালায় তাঁর বাড়িতে। ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। বাইরে থেকে গালিগালাজ ও হুমকি দিতে থাকে। ভয়ে কেঁদে ফেলেন রাফিয়া। বারবার নিজের ও নিজের পরিবারের সুরক্ষার আরজি জানাতে থাকেন।
ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে যোগগুরু রামদেব বলেন, ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে সৌদি আরবে বহু মুসলিম যোগ চর্চা করেন। এটা শরীর ও মন সুস্থ রাখার ভাল উপায়। ধর্মকে এই স্তরে নামিয়ে আনা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন যোগগুরু। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রখ্যাত শিয়া ধর্মগুরু মৌলানা সইফ আব্বাস। তিনি জানান, মুসলিম মহিলা যোগ প্রশিক্ষণ দিলে তাতে খারাপটা কোথায়? প্রশ্ন তোলেন মৌলানা। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। ঘটনার পর রাফিয়ার ঘরের চারপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের মুখ্যসচিব সঞ্জয় কুমার।
0 comments:
Post a Comment