মুম্বই হামলার মূলচক্রী হাফিজ সইদের মুক্তিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ালো উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে। অভিযোগ, শুক্রবার শিবপুরী এলাকায় এই জঙ্গিনেতার মুক্তির আনন্দে রাস্তায় নামেন বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, ‘হাফিজ সইদ জিন্দাবাদ’ স্লোগানও ওঠে।
এলাকায় পালটা জমায়েত করেছিলেন স্থানীয় হিন্দত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরাও। তবে পুলিশের তৎপরতায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এদিকে, হাফিজ সইদের জঙ্গিযোগের কথা স্বীকার করেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর মাইকেল মোরেল। তাঁর বক্তব্য, হাফিজের হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে। পাক-রাজনীতিতে জঙ্গিদের শামিল করতে চাইছে সে।
পাকিস্তানে প্রায় দশমাস গৃহবন্দি ছিলেন জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সইদ ও তার চার অনুগামী। মার্কিন চাপে তার জঙ্গি কার্যকলাপের কথা স্বীকার করলেও, আদালতে কোনও জোরাল প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। তাই গত শুক্রবার হাফিজ সইদ ও তাঁর চার অনুগামীকে গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি দিয়েছে লাহোর হাই কোর্ট। ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারত। বস্তুত, হাফিজ সইদের মতো জঙ্গিনেতার মুক্তি আন্তর্জাতিক মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানে এখন ব্যাকফুটে।
এমনটাই মত কূটনৈতিক মহলের। সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আশঙ্কাও জোরাল হচ্ছে পাক-প্রশাসনের অন্দরে। এই প্রেক্ষাপটে মুম্বই হামলার মূলচক্রীর মুক্তিতে উল্লাসের ছবি দেখা গেল বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের একটি শহরে। পুলিশ জানিয়েছে, লখিমপুরের শিবপুরী এলাকার বেগম বাগ কলোনিতে হাফিস সইদের মুক্তিতে রাস্তায় নেমে পড়েন বেশ কয়েকজন। এলাকার বাড়িগুলিকে সবুজ পতাকা দিয়ে সাজানো হয়। পাকিস্তান জিন্দাবাদ, হাফিজ সইদ জিন্দাবাদ স্লোগানও ওঠে।
প্রথমে ঘটনাটিকে অবশ্য তেমন গুরুত্ব দেয়নি পুলিশ। কিন্তু, এলাকায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরা পালটা জমায়েত করতেই পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নেয়। খবর পৌঁছে যায় জেলাশাসকের দপ্তরে। এরপরই সক্রিয় হয় পুলিশ। স্থানীয় থানার এরক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়িতে সবুজ পতাকা উড়ছে। আমরা দ্রুত পতাকাগুলি সরিয়ে ফেলা হয়। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যরাদের জানানো হয়, গোটা ঘটনার তদন্ত হবে।’ জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দারা যে হাফিজ সইদের মুক্তি ‘উদযাপন’ করছিলেন, তার প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিও পুলিশের হাতে এসেছে। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন লখিমরপুরের ইমাম আসফাক কাদরি। তিনি বলেন, ‘ কেউ দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল কিনা, তা জানি না। একটি পরব উপলক্ষে অনেক বাড়িতে সবুজ পতাকা টাঙানো হয়েছিল। এরসঙ্গে হাফিজ সইদ বা পাকিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই।’
এদিকে এরইমধ্যে হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর মাইকেল মোরেল। তিনি স্পষ্টই বলেছেন, হাফিজ সইদ একজন জঙ্গি। লস্কর-ই-তৈবা-সহ কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী ও আলকায়দার সঙ্গে যোগ রয়েছে তার। পাক-রাজনীতিতেও জঙ্গিদের শামিল করতে চাইছে এই জঙ্গি নেতা।
0 comments:
Post a Comment