তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সহ সভাপতি তাপস হালদারের নেতৃত্বে ১৫০ জনের বেশি তৃণমূল কর্মী সোমবার যোগ দেন বিজেপিতে।
উদ্বোধনের আগেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় দখল করল বিজেপি। নেপথ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার কুন্দখালি গোদাবর গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্যাংরাবিচি গ্রামে। মুকুল রায়ের পথ অনুসরণ করে এই এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সহ সভাপতি তাপস হালদারের নেতৃত্বে ১৫০ জনের বেশি তৃণমূল কর্মী সোমবার যোগ দেন বিজেপিতে। পাশাপাশি স্থানীয় নব নির্মিত তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়টি বিজেপির কার্যালয় হিসেবেও ঘোষণা করা হয়। কাদা দিয়ে মুছে দেওয়া হয় দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূলের নাম ও প্রতীক চিহ্ন। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বের জন্যই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে তাঁদের যোগদান বলে দাবি করেন সদ্য বিজেপিতে আসা তাপস হালদার ও তাঁর অনুগামীরা।
গত রবিবার এই কুন্দখালি গোদাবর অঞ্চলের ট্যাংরাবিচি গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের নবনির্মিত দলীয় কার্যালয়টি উদ্বোধনের কথা ছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিল সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা, জয়নগর লোকসভার সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, কুলতলি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গোপাল মাঝি-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতাদের। দলীয় কার্যালয় উদ্বোধনের পর সেখানে একটি সভা করারও কথা ছিল তাঁদের।
রবিবার বিকেলে যথা সময়ে স্থানীয় প্রায় হাজার চারেক তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা ঘটনাস্থলে চলে এলেও দেখা পাওয়া যায়নি অতিথি তৃণমূল নেতাদের। বারংবার তাঁদের ফোন করেও মেলেনি কোনও উত্তর। ফলে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি তাপস হালদারকে দলীয় কর্মী সমর্থকদের কাছে যথেষ্ট কটূকথা শুনতে হয় ও অপমানিত হতে হয়। সেই কারণে রাগে ক্ষোভে রবিবার রাতেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন এই তৃণমূল নেতা। রাতেই যোগাযোগ করেন স্থানীয় বিজেপি নেতা উত্তম হালদার, খোকন বণিক, বিনয়কৃষ্ণ দাসদের সঙ্গে।
সেই মোতাবেক সোমবার দুপুরেই বিজেপি নেতাদের উপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের তৈরি মঞ্চেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তাপস হালদার। সঙ্গে ছিলেন আরও প্রায় দেড়শো তৃণমূল কর্মী।
যদিও এ বিষয়ে কুলতলি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গোপাল মাঝি বলেন, “ তাপস কোনও দিনই আমাদের দলের কোন পদে ছিল না। দলের অন্যান্য সাধারণ কর্মীর মতো একজন কর্মী ছিল। ওর ওখানে একটা ঘর বানিয়ে সেটাকে পার্টি অফিস করতে চেয়েছিল। কিন্তু ও ইদানীং সিপিএমের লোকজন নিয়ে দলের অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে বুথের মধ্যে ঝামেলা করছিল। সেটা বসে মিটিয়ে দেব বলেছিলাম আমরা। আর ওর ওই কার্যালয়টি ঝামেলা মেটানোর পরই উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছিলাম। শুনেছি আজ ও সিপিএমের লোকজন নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে”।
এ বিষয়ে তাপসবাবু বলেন, “ তৃণমূল দলের নেতাদের কথার ঠিক নেই। দলকে ভালবেসে নিজের জমিতেই দলের কার্যালয় করেছিলাম। নেতারা আমাকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। দলের মধ্যে কোন্দল চলছে। এক নেতাকে ডাকলে অন্যজন আসে না। তাই আমি বিজেপিতে যোগ দিলাম।”
এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সুনিপ দাস বলেন, “রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের ভাঙন অব্যাহত, এটা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। যত পঞ্চায়েত ভোট এগোবে তৃণমূলের সৎ, নিষ্ঠাবান কর্মী সমর্থক বিজেপিতে যোগদান করবেন।”
0 comments:
Post a Comment