JanaSoftR

Sunday, 10 December 2017

মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে এক হিন্দু যুবকের শিরচ্ছেদ করা হয়েছিল মুর্শিদাবাদে, কিন্তু প্রতিবাদ করেনি কেউ

   
প্রতীকী ছবি


রাজস্থানে মুসলিম ব্যক্তিকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় আশানুরুপ ভাবেই সেকুলার, বামপন্থী এবং বুদ্ধিজীবীদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সুবাই মিলে একযোগে rss, bjp তথা হিন্দু সমাজকে খুনি সন্ত্রাসী বলছে যারা অনান্য সব ঘটনায় হয় চুপ থাকে বা বলে বেড়ায় সন্ত্রাসের কোন ধর্ম হয়না। যদিও শত চেষ্টার পরেও rss বা বিজেপির কোন যোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

একটু কৌতূহল বশত পুরনো ঘটনা খুঁজতে গিয়ে জানাগেল ২০০৮ সালে মুর্শিদাবাদের মাটিতে ঘটে যাওয়া এক নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনা যেখানে মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে স্থানীয় ধর্মীয় মোড়লদের বিচারে এক হিন্দু যুবকের শিরচ্ছেদ করা হয়েছিল। তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। তাই খবরটা স্বভাবসিদ্ধ ভাবেই মিডিয়া চেপে গিয়েছিল। যদি সেটা ভিডিও করা হতো তাহলে সেটা রাজস্থানের ঘটনার থেকে অনেক বেশী বীভৎস হতো।


৩০ বছর বয়সী বিহারের মূল নিবাসী শৈলেন্দ্র মুম্বাইয়ে নির্মান্ন কর্মীর কাজ করতো। তার স্ত্রী মুর্শিদাবাদের মানেরাও পরিবারের আর্থিক সমস্যার জন্য মুম্বাইয়ে পরিচারিকার কাজে যোগ দিয়েছিল। সেখানেই তাদের প্রেম হয় এবং পরে ২০০৬ সালে তারা কোর্ট ম্যারেজ করে। কিন্তু মানেরার বাড়ির লোক ধর্মান্ধ হওয়ায় তারা শৈলেন্দ্রর ধর্মের কথাটা ভয়ে বাড়িতে জানায়নি। এর পর ২০০৮ সালের ১৪ই জুলাই ১০ মাসের ছেলেকে নিয়ে তারা মানেরার বাড়িতে আসে।

পুলিশের মতে- রাস্তা দিয়ে একটি জানাজা যাওয়ার সময় তার মুখ দিয়ে কিছু শব্দ বেরোয় যা হিন্দুরা মারা গেলে বলা হয়। এই কথাগুলো তার শ্বশুর শুনতে পেয়ে গ্রামের মাতব্বরদের জানায়। এরপর তার ধর্ম জানার জন্য গ্রামে পঞ্চায়েত ডাকা হয়। সেখানে শৈলেন্দ্রকেও ডাকা হয়। সেখানেই তার মুন্ডচ্ছেদ করার ফতোয়া দেওয়া হয়। সেই মতো তাকে প্রথমে প্রচন্ড মারধোর করা হয় এবং পরে তাকে গলা কেটে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এর পর মৃতদেহ পাট ক্ষেতে ফেলে দেওয়া হয়।

গ্রামের সবাই শৈলেন্দ্রের এই পরিণতির কথা জানলেও তার স্ত্রীকে জানানো হয়নি। ১৭ নভেম্বর পুলিশ এক বেওয়ারিশ দেহ পাওয়ার খবর পায়। তখনও তার পরিচয় জানা যায়নি।

এরপর তার স্ত্রী মৃতদেহ পাওয়ার খবর শুনে থানায় গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ পরে খুনের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে এরপর তাদের কোন শাস্তি হয়েছিল কিনা সেই ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

অবাক ব্যাপার হলো সেই সময় রাজ্য রাজনীতি রিজওয়ানুরের মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় হচ্ছিল, যেখানে বিরোধী নেতৃ মমতা ব্যানার্জী একটা আত্মহত্যাকে হিন্দু দ্বারা এক নিরীহ মুসলিম যুবকের হত্যা করা হয়েছে বলে আকাশ পাতাল তোলপাড় করছিলেন যা পরে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তাই স্বভাবসিদ্ধ ভাবেই শৈলেন্দ্রের মৃত্যু তাকে নাড়া দেয়নি কারণ এটা তার ধর্মের রাজনীতির সাথে খাপ খাই না।
JanaSoftR
Share This:   Facebook   Twitter   Google+   Stumble   Digg    Whatsapp




0 comments:

Post a Comment