টাকা ধার নিয়ে সময়মতো দিতে পারেনি। এটাই নাকি অপরাধ। আর তাই দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসে পরিবারের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। বাবার সামনেই দুই মেয়ের শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। বড় মেয়ের গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে কটূক্তিও করা হয়। থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে পরিবার। দ্বারস্থ হয়েছে আদালতের। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানার সোহাই-শ্বেতপুরের মির্জাপুর গ্রামের।
কিছুদিন আগে প্রতিবেশী বৃহস্পতি মণ্ডলের কাছ থেকে তিরিশ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন সুমনা মণ্ডল (নাম পরিবর্তিত)। সুদে নেওয়া টাকা শোধ করতে দেরি হয়। তাও ১০ হাজার টাকা মিটিয়ে দিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, দিতে পারেননি। ডাকা হয় সালিশিসভা। সভায় সুমনার পরিবারের কেউ যায়নি। টাকাও মেটাতে পারেনি। অভিযোগ, সোমবার রাতে (১১ ডিসেম্বর) তাদের বাড়িতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের নিয়ে চড়াও হয় বৃহস্পতি। সে সময় সুমনা বাড়ি ছিলেন না। তিনি টাকা জোগাড় করতে বেরিয়েছিলেন। বাড়ি ছিলেন তাঁর স্বামী ও দুই মেয়ে।
সুমনার অভিযোগ, “বৃহস্পতি ও অন্য দুষ্কৃতীরা বাড়ি ঢুকেই অকথ্য গালিগালাজ শুরু করে। টাকা মেটানোর জন্য হুমকি দেয়। আমি টাকা আনতেই গিয়েছিলাম। মেয়ে ফোন করে। বলে, মা তাড়াতাড়ি এসো। ওরা মেরে ফেলবে। আমার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মাথাও ফাটিয়ে দেয়। সাদা কাগজে সই করিয়ে নেয়। বড় মেয়ে আটকাতে যায়। ওরা মেয়েকে বলে, তোর মা অসভ্য। তুই অসভ্য। কলেজে পড়িস না। ..... করিস। তোর মা এখানে থাকলে ওখানে বিচুটি পাতা ঘষে দিতাম। এরপর আমার মেয়ের গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে বলে, তোর এটা...। ছোটো মেয়েরও শ্লীলতাহানি হয়। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা আসে। তখন পালিয়ে যায় ওরা।”
দেগঙ্গা থানায় দুষ্কৃতী জলধর মণ্ডল, বৃহস্পতি সহ ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় মণ্ডল পরিবার। কিন্তু, সুমনার অভিযোগ, “দুষ্কৃতীরা শাসকদলের মদতপুষ্ট হওয়ায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” এরপর বৃহস্পতিবার ওই পরিবার বারাসত আদালতের দ্বারস্থ হয়। আদালতের নির্দেশে সেদিনই নির্যাতিতা যুবতির গোপন জবানবন্দী নেওয়া হয়। এদিকে, আতঙ্ক ও লজ্জায় গতকাল আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই যুবতি। স্থানীয়রাই তাকে উদ্ধার করে। বিচারের আশায় গতকালই সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হয় সুমনার পরিবার। সুমনার প্রশ্ন, “প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না ? আমি যখন থানায় গিয়েছিলাম, তখন বড়বাবু বলেন, টাকা তছরূপ করছেন। আমি জানি এটা। তাহলে ওনাকে কি কেউ আগে থেকে এবিষয়ে জানিয়ে রেখেছে ?" এবিষয়ে দেগঙ্গা থানার তরফে কিছু বলা হয়নি।
0 comments:
Post a Comment