কাজের বাড়িতে ক্রীতদাসের মটো খাটুনি, তারসঙ্গে জুটত বেধড়ক মার, সঙ্গে দিনের পর দিন না খেয়ে থাকা। বিহার থেকে আসা ১৩ বছরের ছোট্ট মেয়েটা সেই অত্যাচার আর সহ্য করতে পারেনি। দুবছর সহ্য করার পর অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। কাজের বাড়ির ১১ তলা থেকে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু কথায় আছে রাখে হরি মারে কে। মেয়েটির ক্ষেত্রে এই কথাটি একেবারেই প্রযোজ্য। ১০ তলায় একটি পাখির বাসায় সে আটকে যায়। তারপর সেই বাড়ির অন্য বাসিন্দার চোখে পড়ে যায় ঝুলন্ত মেয়েটি। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় অবশেষে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদাবাদে। মেয়েটি কনিষ্ক টাওয়ারে ১১ তলায় একটি অ্যাপার্টমেন্টে কাজ করত।
শিশু শ্রম আইনে ১৩ বছরের ওই মেয়েটির ওপর অকথ্য অত্যাচার চালানোর অপরাধে ২৩ বছরের এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নাবালিকা মেয়েটি তার বয়ানে জানিয়েছে, অসহনীয় অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেয়।জানা গিয়েছে, গত দুবছরে মেয়েটিকে কার্যত নিজের অ্যাপার্টমেন্টে বন্দি করে রেখেছিলেন অভিযুক্ত মহিলা। বাচ্চা মেয়েটিকে বেরোতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। মেয়েটির সারা গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ও পোড়া দাগ দেখা গিয়েছে। বাড়ির অন্য প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে মাঝেমধ্যেই বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পাওয়া যেত। ২৩ বছরের অভিযুক্ত তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
মেয়েটিকে ডেকে শক্তি বাহিনী নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই চিকিত্সকরা তাকে পরীক্ষা করে জানিয়েছে, মেয়েটি দীর্ঘদিন ধরে অনাহারে থেকেছে। বাচ্চা মেয়েটিকে শিশু কল্যান কমিটির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করানো হয়েছে। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, আতঙ্কে ওই টাওয়ারের অন্য প্রতিবেশীরা বিভিন্ন সময় নানা ধরনের বিবৃতি দিচ্ছেন।
সূত্রের খবর, বাচ্চা মেয়েটি এবং তরুণী দুজনেই বিহারের পটনার বাসিন্দা। তরুণীর পটনার বাড়িতে আক্রান্ত মেয়েটির মা কাজ করে। তারাই মেয়েকে ফরিদাবাদে ওই তরুণীর সঙ্গে কাজ করতে পাঠিয়েছিল। এখানে এনে মেয়েটিকে প্রতিদিন মারধর করা হত বলেও জানা গিয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment