চলতি মাসে জাতীয় রাজধানী বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যার অর্থ হচ্ছে দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো যাবে না দিল্লিতে। মূলত পরিবেশ দূষণ থেকে দিল্লিকে রক্ষা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এই নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়।
একসময়ের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি বর্তমান ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় ট্যুইটারে লিখেছেন, “প্রথমে দহি হান্ডি, এখন বাজি। পুরষ্কার ফিরিয়ে দেওয়ার দল এবং যারা মোমবাতি হাতে মিছিল করে তারা হয়তো হিন্দু ধর্মের শেষকৃত্য নিয়েও প্রশ্ন তুলবে।” দহি হান্ডি মহারাষ্ট্রে পালিত হওয়া একটি উৎসব। প্রতি বছর মুম্বই এবং থানে শহরে বেশ সাড়ম্বরের সঙ্গে এই উৎসব পালন করা হয়। বেশ ঝুঁকি পূর্ণ হওয়ার কারণে এই উৎসব নিষিদ্ধ করার দাবি করে কিছু সংগঠন। একইরকমভাবে পরিবেশ দূষণের কারণে দীপাবলিতে বাজি নিষিদ্ধ করার দাবি দীর্ঘদিনের। রাজধানী দিল্লিতে এমনিতেই দূষণের হার মারাত্মক। সেই কারণে দীপাবলিতে বাজি নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে। দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। সেই মামলাতেই আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম দিন পর্যন্ত দিল্লিতে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। যা নিয়েই ট্যুইট করেছেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়।
कभी दही हांडी,आज पटाखा ,कल को हो सकता है प्रदूषण का हवाला देकर मोमबत्ती और अवार्ड वापसी गैंग हिंदुओ की चिता जलाने पर भी याचिका डाल दे !
— Tathagata Roy (@tathagata2) October 10, 2017
একটি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের করা এহেন ট্যুইট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজ্যপালের এই ধরণের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। যদিও এই বিষয়ে তথাগত রায় বলেছেন, “আমি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করিনি। নিজের মত প্রকাশ করেছি।” দিল্লিতে দূষণের মাত্রা অনেক বেশি। এশিয়া মহাদেশের দূষিত শহরের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে ভারতের রাজধানী শহর। প্রতি বছর দীপাবলির পর পরিস্থিতি বেশ প্রতিকূল হয়ে যায়। দিল্লির দূষণের বিষয়ে তিনি অবগত বলে দাবি করেছেন তথাগত বাবু। একইসঙ্গে তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন, “দীপাবলি বছরে মাত্র একবার হয়।”
রাজ্যপাল হওয়ার পরে বেশ কয়েকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন। ইয়াকুব মেননের ফাঁসির পরেই তিনি ট্যুইট করেন, “ইয়াকুব মেননের শেষযাত্রায় যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের ওপর নজর রাখুক গোয়েন্দারা। এদের অনেকেই সম্ভাব্য জঙ্গি।” আরও লেখেন, ”আমার সাংবিধানিক দায়িত্ব জনস্বার্থে এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা। এতে আমার রাজ্যপাল পদের এক্তিয়ার লঙ্ঘিত হয় না।” যা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এরপরে পাঠানকোটে হামলাকারী জঙ্গিদের অন্ত্যোষ্টি নিয়ে বিস্ফোরক ট্যুইট করেন তথাগত রায়। ট্যুইটে তিনি বলেন, “জঙ্গিদের অন্ত্যোষ্টির বিষয়ে রাশিয়ান প্রথা মানা উচিত। জঙ্গিদের দেহ শুয়োরের চামড়ায় মুড়ে মাথা নিচু করে কবরে ঢোকানো উচিত।’’ রাজ্যপালের এহেন মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ‘যা ছিল আমার দেশ’ নামক একটি বই লিখেছিলেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়। সেই বইতে দেশ ভাগ এবং পরবর্তী অবস্থার কথা তিনি উল্লেখ করেছিলেন। যা নিয়েও বেশ বিতর্ক হয়েছিল। এছাড়াও ভারতে সাম্প্রদায়িক সমস্যা মেটাতে গৃহযুদ্ধের পক্ষেও সাওয়াল করেছিলেন যা নিয়েও বিতর্ক হয়।
0 comments:
Post a Comment