‘বীরভূমের জবাব হবে বীরের ভাষায়।’ স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ফের রাজ্য সরকারের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন দিলীপ ঘোষ। রামের পরে হনুমান। ঘাসফুল বনাম পদ্মফুলের লড়াইতে নতুন মাত্রা যোগ করল মঙ্গলবার বীরভূমে গেরুয়া বাহিনীর মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ।
রাম নবমীর মিছিল ঘিরে বিতর্ক এখনও চলছে। বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ বহু কর্মী, সমর্থকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। সেই বিতর্কের মধ্যেই এ বার হনুমান জয়ন্তীর মিছিল ঘিরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বীরভূমের সিউড়ি। বিনা অনুমিততে মিছিল করা এবং পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির অভিযোগে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ এবং র্যাফ। বিজেপি জেলা নেতৃত্বের দাবি, এই মিছিলে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও থাকার কথা ছিল।
এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এবেলা.ইনকে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘উদ্যোক্তারা শেষ মহূর্তে ডাকায় মিছিলে যোগ দিতে পারিনি। এ দিন বিধানসভায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যোগ দিতে হয়। কিন্তু এ দিন যে ভাবে পুলিশকে দিয়ে শাসকদল শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপরে আক্রমণ চালালো তার জবাব পেতে হবে। আর সেই জবাব হবে বীরের মতো।’
এ দিন পুলিশের লাঠিচার্জে অনেকেই জখম হয়েছেন বলে দাবি বিজেপির। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আজকের মিছিলে কোনও অস্ত্র ছিল না। একটি ধর্মীয় মিছিলের অনুমতি কেন আটকে দেওয়া হল সেটাও স্পষ্ট নয়। মানুষই এর জবাব দেবে। শাসকদল জমি হারাচ্ছে, তাই মাথার ঠিক নেই। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের জবাব পেতেই হবে সরকারকে।’
কিন্তু বীরের মতো জবাব কেমন হবে? বিজেপি সভাপতি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী ২০ এপ্রিল বীরভূমে সিউড়িতে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে চাইছেন দিলীপ ঘোষ। সেই সমাবেশকে ‘হিন্দু বিক্ষোভ’ হিসেবে দেখাতে চান দিলীপ। হিন্দু ভাবাবেগের উপরে আক্রমণের প্রচার করে সমাবেশকে বড় চেহারা দিতে সঙ্ঘ পরিবারের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা বলা হয়েছে বলেও খবর। প্রাথমিক ভাবে ২০ তারিখ সিউড়িতে ওই সমাবেশ হবে বলে ঠিক হলেও পরে দিন ও স্থান বদল হতে পারে বলেও বিজেপির ওই সূত্র জানিয়েছে।
এ দিন নিজের ফেসবুক পেজেও বীরভূমে লাঠিচার্জের বিরোধিতা করেন দিলীপ ঘোষ। সেই পোস্ট-এ তিনি রাজ্য তালিবানি শাসন চলছে বলেও উল্লেখ করেন। দিলীপ লিখেছেন—
‘আজকে সিউড়ি তে শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় শোভাযাত্রার ওপরে পুলিশ নির্মম ভাবে লাঠিচার্জ করেছে। এতে বহু অংশগ্রহণকারী আহত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ ধীরে ধীরে তালিবান রাজত্বের দিকে যাচ্ছে, এখানে হিন্দু ধর্মের আচরণ করাটা অপরাধের সমান। এখানে দুর্গাপূজার বিসর্জন এবং রাম নবমী উৎসব পালন করতে উচ্চ আদালতের (Calcutta High Court) অনুমতি নিতে হয়। প্রশাসনের তরফ থেকে স্কুলে স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ করানো হয়। এই প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের প্রতি ধিক্কার জানাই।’
0 comments:
Post a Comment