অপহরণ, বন্দি, পাচার, ধর্ষণ। মাত্র ১৫ বছরের জীবনেই যে এত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হবে, তা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেনি ছত্তিশগড়ের নাবালিকা। কিন্তু এই সমস্ত দুর্বিসহ অবস্থাতেই পড়তে হয়েছে তাকে। ফের রাজধানীর বুকে ক্ষতবিক্ষত হল এক মহিলার জীবন। ২০১৬ সালে অক্টোবরে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ছিল সে। ট্রেনে চেপে চলে যায় দিল্লি। কিন্তু রাজধানীতে নামতেই ঘটে অঘটন। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আর্মান নামের এক ব্যক্তি দিল্লি স্টেশন থেকে তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে বান্ধবী হাসিনার সঙ্গে থাকত ওই ব্যক্তি। দক্ষিণ দিল্লির একটি বাড়িতে বন্দি করে আর্মান তাকে বেশ কয়েকদিন ধর্ষণ করে।
সেখান থেকে কোনওরকমে পালিয়ে যায় নাবালিকা। কিন্তু তাতেও মুক্তি মেলেনি। দুঃস্বপ্নের আরও অনেক কিছু বাকি ছিল। নাবালিকার অভিযোগ, তাকে দু’বার বিক্রিও করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর তিন শিশুপাচারকারীর কবলে পড়ে সে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার মতো বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে টানা তিন মাস ধরে তিন ব্যক্তি তাকে গণধর্ষণ করে বলেও জানায় সে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ দিল্লি পুলিশের সহায়তায় অবশেষে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেন দুই বিএসএফ জওয়ান।
যে তিন ব্যক্তি নাবালিকার উপর দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালিয়ে তাকে বিক্রি করে দিয়েছিল, তাদের ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু তারা পালাতে সফল হয়। দু’মাস ধরে লুকিয়ে থাকার পর শেষমেশ ১১ এপ্রিল তিনজনকে দিল্লির সারাই কালে খান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিসিপি রোমিল বানিয়া বলেন, অভিযুক্ত আফরোজ, জাকির এবং যাদবকে ফরিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর্মান এবং হাসিনাও পলাতক ছিল। কিন্তু তাদেরও আটক করা হয়েছে। নাবালিকাকে আপাতত একটি হোমে রাখা হয়েছে। সে পুলিশকে জানায়, নাবালিকা হওয়ার সত্ত্বেও তার বাড়ির লোকজন তাকে জোর করে বিয়ে দিতে চান। সেই কারণে সে ছত্তিশগড় ফিরতে চায় না।
0 comments:
Post a Comment