উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের পরও ‘সন্তুষ্ট’ নন অমিত শাহ। এখন তাঁর লক্ষ্য ওড়িশা, বাংলা ও কেরল। শনিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ভুবনেশ্বরে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এমনটাই বললেন দলীয় কর্মীদের৷ সূত্রের খবর, বিজেপির কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তিনি বলেছেন, “বিজেপির স্বর্ণযুগ এখনও আসেনি। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও কেরল জয়ের পর আসবে বিজেপির স্বর্ণযুগ।”
সামনের মাসেই কেন্দ্রের মোদি সরকারের তিন বছর পূর্ণ হচ্ছে৷ এই সরকারের মেয়াদ আর দু’বছর৷ এই সন্ধিক্ষণে আগামী লোকসভা নির্বাচন সর্বাধিক গুরুত্ব পেলেও, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে সংগঠনের প্রভাব বাড়ানোয় বিশেষ নজর থাকবে বলেই খবর৷ সেক্ষেত্রে সর্বাধিক নজরে রয়েছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ৷ এদিন ভুবনেশ্বরে নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানাতে রাস্তার দু’ধারে লাখো মানুষের ভিড় দেখে বিজেপি নেতাদের মুখের হাসি আরও চওড়া হয়েছে। দু’দিনের এই বৈঠকে যোগ দিতে ওড়িশায় উপস্থিত হয়েছেন প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদবানিও।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত ওড়িশায় তেমন কোনও প্রভাব ছিল না বিজেপির৷ ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে মোদি হাওয়ায় ভর করে সারা দেশে যখন বিজেপি হইহই করে জিতেছে, তখনও ওড়িশা বিধানসভার ভোটে ১৪৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ১০টি আসনে জিততে পেরেছে তারা৷ অথচ, মাত্র বছর তিনেকের মধ্যে বিজেপি সেখানে বিপুলভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ ফেব্রুয়ারির পঞ্চায়েত নির্বাচন তার প্রমাণ৷ ২০১২-র ভোটে পাওয়া ৩৬ আসন এবার হয়েছে ৩০৬৷ অর্থাত্ ৮৫০ শতাংশ বৃদ্ধি৷ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওড়িশায় পট্টনায়েক সরকারের দিন ফুরিয়েছে৷ তাই ২০১৯-এর লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে এই ফল ধরে রাখাই বিজেপির লক্ষ্য৷ একারণেই সাংগঠনিক শক্তি প্রমাণে ওড়িশাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের জন্য৷ অন্যদিকে, ক্রমশ শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকেও এই সুযোগে বার্তা দেওয়া যাবে বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতারা৷
পূর্বের রাজ্যগুলিকে দখলে আনতে বিজেপি ওড়িশাকেই ‘গেটওয়ে’ করতে চায়৷ পূর্ব দখলে এলে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিও আর বেশিদিন হাতের বাইরে রাখবেন না নরেন্দ্র মোদি৷ ইতিমধ্যেই অসম এবং মণিপুর দখলে নিয়েছে বিজেপি৷ এই পরিস্থিতিতে লক্ষ্য রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও৷ শনিবার বিকেল থেকে জাতীয় কর্মসমিতির রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী ভুবনেশ্বরে পৌঁছনোর আগে শুক্রবারই পৌঁছেছেন অমিত শাহ৷ ওড়িশা পৌঁছে সভাস্থলে যাওয়ার আগে মাঝরাস্তায় গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী। রাস্তার দু’ধারে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন, খানিকটা পথ পায়েও হাঁটেন। ১৪৭ আসনের ওড়িশা বিধানসভার ‘ম্যাজিক ফিগার’ ৭৩৷ জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের মূল দায়িত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যের নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান৷
0 comments:
Post a Comment