JanaSoftR

Monday, 23 January 2017

BIG NEWS: বঙ্গবন্ধুর বাংলায় পাঠ্যবইয়ে রবীন্দ্রনাথকে ছেঁটে ফেললেন হাসিনা


বিশেষ প্রতিবেদন: কবি লিখেছিলেন- ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে…’৷ রবীন্দ্রনাথের এই গান ও কবিতাটি আর পাঠ্যবইয়ে রাখতে নারাজ শেখ হাসিনা সরকার৷ ফলে বাংলাদেশের ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যবই ‘আনন্দপাঠ’ (দ্রুত পঠন) থেকে নাম কাটা গেল রবীন্দ্রনাথের৷  তাঁর সৃষ্টি ‘আমার সোনার বাংলা…’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত৷


ফলে ষষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ্য বইতে রবীন্দ্রনাথের কবিতা বাদ দেওয়ায় তীব্র আলোড়িত বাংলাদেশের সুশীল সমাজ৷ তাঁদের একাংশের আশঙ্কা ভবিষ্যতে হয়তো জাতীয় সঙ্গীতের উপরেও কোপ পড়তে পারে৷ একইসঙ্গে অভিযোগ, ইসলামি ভাবধারা প্রয়োগ করতে চাইছে সরকার৷ সেই কারণে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে জোর করে অমুসলিম কবি-সাহিত্যিকদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে৷  বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ মাধ্যম  ‘বাংলা ট্রিবিউন’ জানাচ্ছে এই খবর৷
বাদের তালিকায় শরৎচন্দ্র থেকে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
শুধু রবীন্দ্রনাথ নন, ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা বই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘লালু’ সত্যেন সেনের ‘লাল গরুটা’৷
অষ্টম শ্রেণির বাংলা দ্রুতপঠন আনন্দপাঠ থেকে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ‘রামায়ণ-কাহিনি’ বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সপ্তম শ্রেণির বাংলা বই ‘সপ্তবর্ণা’তে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘লাল ঘোড়া’
নবম শ্রেণির বাংলা বই ‘মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য’ থেকে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পালামৌ’ ও জ্ঞানদাসের ‘সুখের লাগিয়া’, ভারতচন্দ্রের ‘আমার সন্তান’, লালন শাহের ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্বাধীনতা’ ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সাঁকোটা দুলছে’ বাদ দেওয়া হয়েছে৷
পাঠ্যসূচিতে ইসলামিকরণের চেষ্টা
প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের বাংলা পাঠ্যসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে এমন সব রচনা যাতে ধর্মীয় চিন্তাধারা ছড়িয়ে পড়ে৷ যেমন শাহ মোহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’, আলাওলের ‘হামদ’, আব্দুল হাকিমের ‘বঙ্গবাণী’, গোলাম মোস্তফার ‘জীবন বিনিময়’ ও কাজী নজরুল ইসলামের ‘উমর-ফারুক’, হবীবুল্লাহ বাহারের ‘মরু ভাস্কর’।
গত বছর হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোট  নামে ধর্মীয় সংগঠন  প্রধানমন্ত্রীর দফতরে  স্মারকলিপি জমা দিয়ে পাঠ্যবই সংশোধনের দাবি জানিয়েছিলো। অবিলম্বে পাঠ্যবই সংশোধন না হলে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিলো কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড। বাংলাদেশি সুশীল সমাজের ধারণা, এই কারণেই পাঠ্যবইয়ে এত ব্যাপক পরিবর্তন এনে অমুসলিম কবি-সাহিত্যিকদের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানিয়েছেন, নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন করা হয়েছে।
প্রতিবাদে সরব বুদ্ধিজীবীরা
পাঠ্যবই থেকে অমুসলিম  কবি সাহিত্যিকদের নাম ছেঁটে ফেলায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ  দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা৷
‘বাংলা ট্রিবিউন’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক চিন্তা থেকেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, মাইকেল মধুসূদন দত্তসহ অনেকের লেখা বাদ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাদের অবদান মানুষ ভুলে যায়। এটা খুব বেদনাদায়ক। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবো। তিনি আরও বলেন, এই  ধরনের অপচেষ্টা পাকিস্তান আমলেও হয়েছিল।
দেশের অপর গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ড. সফিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, আমাদের শেকড় থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
JanaSoftR
Share This:   Facebook   Twitter   Google+   Stumble   Digg    Whatsapp




0 comments:

Post a Comment