JanaSoftR

Wednesday, 15 February 2017

কঙ্কালকাণ্ডের ছায়া দিল্লিতে, স্ত্রীর মৃতদেহের সঙ্গে ৩ রাত্রি শুলেন স্বামী, তারপর কী হল



১৪ তারিখে গোটা দেশ যখন প্রেম দিবস পালনে মাতোয়ারা, ঠিক তখনই সামনে এল দিল্লির বুকে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এমনকী, ৩ দিন ধরে স্ত্রীর মৃতদেহের সঙ্গে একই বিছানায় শুয়ে ছিল স্বামী।
প্রায় বছর দুয়েক আগে কলকাতা-সহ সারা দেশে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল কঙ্কালকাণ্ড। কলকাতার পার্কস্ট্রিট এলাকার রবিনসন স্ট্রিটের দে বাড়িতে আত্মহত্যার ঘটনার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ হয়েছিলে পুলিশের। সামনে এসেছিল, কীভাবে মেয়ের মৃতদেহের সঙ্গে ৬ মাস ধরে বাস করছিলেন গৃহস্বামী এবং তাঁর ছেলে। এমনকী, ওই বাড়ি থেকে মিলেছিল কুকুরের কঙ্কালও।

কলকাতার এই ঘটনার ছায়া এবার দিল্লিতে। সেখানে ঘটনার নৃশংসতা অবশ্য কলকাতার রবিসন স্ট্রিটের কঙ্কালকাণ্ডকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে।

কারণ, দিল্লিতে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে খুন করে ৩ দিন ধরে সেই মৃতদেহের সঙ্গে রাত্রিবাসই শুধু করেনি, মৃতদেহের মুণ্ডু কেটে নিয়ে ঘরে ঝুলিয়ে রেখেছিল।

দিল্লির মধুর বিহারের বাসিন্দা সুবোধ কুমার এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত বলে দাবি প্রতিবেশীর। প্রায় দিনই স্ত্রী মণীষাকে মারধোর করত সুবোধ। ঝাড়খণ্ডের লোক সুবোধ দিল্লিতে কলের মিস্ত্রী হিসাবে কাজ করে। ৯ ফেব্রুয়ারি সুবোধ তার ৯ বছর এবং ১২ বছরের দুই মেয়েকে রাঁচিতে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। গত শনিবার রাতে মণীষার সঙ্গে ফের ঝগড়া বাধে সুবোধের। ভারী পাইপ দিয়ে সুবোধ মণীষার মাথায় সমানে বাড়ি মেরে থেঁতলে দেয়। সঙ্গে সঙ্গেই
মৃত্যু হয় মণীষার। এরপর মোটা লেপে মণীষার দেহ জড়িয়ে বিছানার উপর ফেলে রাখে। এভাবে শনিবার, রবিবার ও সোমবার রাতে মণীষার দেহের পাশেই শুয়েছিল সুবোধ।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র দিন সকালে বাজার থেকে করাত কিনে আনে সুবোধ। এরপর মণীষার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে সে। ধড় থেকে মাথাও আলাদা করে ফেলেছিল সুবোধ। ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র বিকেলে পুলিশ যখন সুবোধের ফ্ল্যাটে ঢোকে তখন মণীষার কাটা মুণ্ডটি ঘরের মধ্যে কাপড় মেলার তারে ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখা ছিল।

প্রতিবেশীদের দাবি, দিন কয়েক ধরে মণীষার কোনও সাড়া-শব্দ না পেয়ে তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল যে গুরুতর কিছু একটা হয়েছে। কারণ, সুবোধের ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধও বেরচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালে সুবোধকে বাড়ির বাইরে দেখে প্রতিবেশীরা মণীষার কথা জিজ্ঞেস করেন। সুবোধ নাকি তখনই মণীষাকে খুন করার কথা স্বীকার করে নেয় এবং ঘরের মধ্যেই দেহ রাখা আছে বলে জানায়। তবে, তাঁর পারিবারিক ব্যাপারে প্রতিবেশীদের নাক না গলানোর কথা বলে ঘরের মধ্যে নাকি সুবোধ ঢুকে পড়েছিল। এরপরই এক প্রতিবেশী পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।

জানা গিয়েছে, সুবোধ মাস ছয়েক আগে দ্বিতীয় বিয়ে করে। সম্প্রতি মণীষা এবং দুই মেয়েকে নিয়ে সুবোধ মধু বিহার এলাকারই নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছিল। এই ফ্ল্যাটের পাশেই অন্য একটি ফ্ল্যাটে সুবোধ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে আসে। মণীষা এরপরই নাকি স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা জেনে যান এবং বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু, সুবোধ কোনওভাবেই মণীষার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ দিতে রাজি ছিল না। এই নিয়ে দু'জনের মধ্যে গণ্ডগোল লেগেই থাকত। পরিণামে মণীষাকে খুনের চক্রান্ত করে এবং পরিকল্পনামাফিক দুই মেয়েকে রাঁচিতে পাঠিয়ে দিয়েছিল সুবোধ।
JanaSoftR
Share This:   Facebook   Twitter   Google+   Stumble   Digg    Whatsapp




0 comments:

Post a Comment