আগের পক্ষের দেওরের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেই স্বামীকে খুন করিয়েছেন তিনি, ধৃত মহিলা জেরায় এ কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করল পুলিশ। রবিবার সকালে অন্ডালের খান্দরায় নীলকণ্ঠ ভুঁইয়াপাড়ায় বাড়িতেই একটি ট্রাঙ্ক থেকে বছর বিয়াল্লিশের দেবানন্দ বাউরির দেহ উদ্ধার হয়। তার পরেই প্রতিবেশীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রী লালমন্তিদেবীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতে তাঁর আগের পক্ষের দেওর অমরজিত্ ভুঁইয়াকেও লাগোয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
লালমন্তিদেবীর প্রথম পক্ষের স্বামী সুরেশ ভুঁইয়া অন্ডালের বাঁকোলা কোলিয়ারিতে কাজ করতেন। আদতে তিনি ছিলেন নিরসার বাসিন্দা। ২০০৯ সালে তাঁর মৃত্যুর পরে পরিজন হিসেবে খনিতে চাকরি পান লালমন্তি।
তাঁদের দুই ছেলে রয়েছে। ২০১১ সালে লালমন্তি বিয়ে করেন নিরসারই বাসিন্দা দেবানন্দকে।
প্রতিবেশীরা জানান, কয়েক দিন আগে লালমন্তির আগের পক্ষের দেওর অমরজিত্ নিরসা থেকে খান্দরায় আসে। শনিবার সকালে লালমন্তি পড়শিদের কাছে দাবি করেন, আগের রাতে একটি ঘরে ছেলেদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি।
অন্য ঘরে মদ্যপান করেন অমরজিত্ ও দেবানন্দ। সকাল থেকে দু'জনেরই খোঁজ নেই। রবিবার সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে পড়শিরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে বাড়িতে একটি ট্রাঙ্ক থেকে দেবানন্দের দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশের দাবি, জেরায় লালমন্তি জানিয়েছেন, দেবানন্দ কাজকর্ম বিশেষ কিছু করতেন না। তাই রোজগার ছিল না। সে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তাঁদের মধ্যে অশান্তি চলছিল। লালমন্তিই অমরজিত্কে ডেকে পাঠান খান্দরায়। শুক্রবার রাতে দেবানন্দ ও অমরজিত্ একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিল। মাঝ রাতে সেখানে যান লালমন্তি। তার পরে দু'জনে মিলে দেবানন্দের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ ট্রাঙ্কে ভরেন। পুলিশের আরও দাবি, লালমন্তি জানিয়েছেন, পরে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার নাম করে ট্রাঙ্কটি গাড়িতে তুলে নিয়ে অন্য কোথাও ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। তবে তার আগেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে ঘটনা সামনে চলে আসে।
সোমবার ধৃত দু'জনকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের ছ'দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানায়।
0 comments:
Post a Comment