‘আউটলুক’ সহ বিভিন্ন ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মীকে ছেঁটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতার মিডিয়া জগতের নক্ষত্র হয়ে থাকা এই মিডিয়া সংস্থায় কাজ করেন বহু মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই কোপ পড়তে শুরু করেছে বহু কর্মীর উপরে। দেশের প্রায় প্রত্যেক রাজ্যেই রয়েছে ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ -এর করেসপন্ডেন্ট। এইসব প্রতিনিধিদের অর্ধেকেরও বেশিজনকে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। কোপ পড়েছে দিল্লির মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকা প্রতিনিধিদের উপরেও। গত বছরের ডিসেম্বরে কর্মী ছাঁটাই শুরু হয় আনন্দবাজারে। এরপর থেকেই এবিপি গ্রুপের ছত্রছায়ায় থাকা সব সংবাদপত্র বা পত্রিকাগুলিতেই আশঙ্কার মেঘ দেখা যায়।
তবে সেটা যে এতটা আকস্মিক হবে, এটা হয়ত প্রত্যাশা করেননি এই সংস্থায় বহু বছর ধরে কাজ করা সাংবাদিকরা। গত ২ ফেব্রুয়ারি তাঁদেরকে এই নোটিশ দেওয়া হয়। অবসরের বয়স পর্যন্ত এইসব কর্মীকে তাঁদের বেসিক স্যালারি দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। আরও বলা হয় যে, নিজে থেকে চলে না গেলে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। যাতে রীতিমত হতভম্ব কর্মীরা। স্বাভাবিকভাবেই এখনও মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। নিঃশব্দে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে প্রতিবাদ।
এই ছাঁটাইয়ের প্রাথমিক কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছিল বিমুদ্রাকরণের প্রভাব। কিন্তু, শোনা যাচ্ছে ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে পাল্লা দিতে না পেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বাংলা মিডিয়ার ‘হোয়াইট হাউস’কে। ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে যে লোকসান হচ্ছে তার জন্যই নাকি আর শুরু হয়েছে ‘কস্ট কাটিং’। ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘আনন্দপ্লাস’-এর মত জনপ্রিয় ক্রোড়পত্র বা ‘গ্র্যাফিটি’র মত সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মালিকানা সামলানো অভিক সরকারের পর, আপাতত এবিপি গ্রুপের শীর্ষে রয়েছেন তাঁর ভাই অরূপ সরকার। তিনিই এই বিশাল আকারের সংস্থাকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সারদা কেলেঙ্কারির জেরে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে রাজ্যের ১৮টি সংবাদপত্র-সংবাদমাধ্যম রাতারাতি বন্ধ হয়েছিল। এসবই ছিল সারদা গোষ্ঠীর। ফলে সেইসময় একই দিনে ১৪০০ সাংবাদিক-সংবাদকর্মী বেরোজগার হয়েছিলেন। প্রভাব পড়েছিল অন্যান্য ছোটখাটো সংবাদপত্রেও। বছর চারেক বাদে আবার একটা গোষ্ঠীরই একসঙ্গে প্রায় হাজার খানেক কর্মীর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হল।
0 comments:
Post a Comment