সূর্য নমস্কারের মুদ্রা, প্রাণায়ামের কৌশলের সঙ্গে ‘মুসলিম ভাইদের’ নমাজ পড়ার ভঙ্গির মিল আছে বলে ‘সম্প্রীতি’র বার্তা দিতে চাইলেন যোগী আদিত্যনাথ। কিন্তু লখনউয়ে যোগ মহোৎসবের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তিন বছর আগে মোদী সরকারের যোগ দিবস পালনের সময়ে সূর্য নমস্কারে আপত্তি তুলেছিলেন সংখ্যালঘুদের একাংশ। তাঁদের মতে, মুসলিম ধর্মবিশ্বাসে সূর্য নমস্কারের স্থান নেই। সেই সময়ই আদিত্যনাথই দাবি করেছিলেন, যাঁরা সূর্য নমস্কারের বিরোধিতা করছেন তাঁদের গোটা জীবন গভীর সমুদ্রে কিংবা অন্ধকার ঘরে বাস করা উচিত।
কিন্তু আজ তিনি যোগ থেকে ধর্মকে আলাদা করে যোগসূত্র খুঁজতে চেয়েছেন। বলেছেন, ‘‘সূর্য নমস্কারের আসনের ভঙ্গি, মুদ্রা, প্রাণায়ামের কৌশলের সঙ্গে নমাজ পড়ার ভঙ্গির মিল আছে। কিন্তু কিছু লোক সূর্য নমস্কারে ধর্মের রং লাগায়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সূর্য নমস্কার আর নমাজে মিল থাকলেও এত দিন কেউ তাদের মেলানোর চেষ্টা করেনি। কারণ, ক্ষমতাসীনরা কেউ যোগে আগ্রহী ছিলেন না। আগ্রহী ছিলেন ভোগে। যাঁরা বিভাজন করেন, তাঁরা মানুষকে একজোট করতে পারবেন না। যোগেও তাঁদের বিশ্বাস থাকা সম্ভব নয়।’’
কিন্তু আদিত্যনাথের এই বক্তব্য মানতে রাজি নন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের একাংশ। অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সদস্য কমাল ফারুকির বক্তব্য, ‘‘সূর্য নমস্কার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অর্থহীন। মুসলিমরা সর্বশক্তিমান ছাড়া অন্য কারও প্রতি প্রার্থনা জানান না।’’ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির মতে, ‘‘বিতর্ক তৈরি করতেই যোগীকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনি সমাজের পক্ষে ভয়ঙ্কর বার্তা দিচ্ছেন।’’ এআইএমআইএম নেতা আসিম ওয়াকার বলেন, ‘‘সূর্য নমস্কার ও নমাজে মিল থাকলে, কাল থেকে যোগীই নমাজ পড়ুন। কেন সকলকে যোগ করতে বলছেন?’’ কংগ্রেসের এক নেতার প্রশ্ন, ‘‘এখনও পর্যন্ত সকলের জন্য উন্নয়ন করে উঠতে পারেননি যোগী। এ ভাবে অন্যের আস্থায় আঘাত দিয়েই কি তিনি ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ রূপায়ণ করতে চান?’’
জুন মাসে লখনউয়ে যোগ দিবস পালন করতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। যোগগুরু রামদেবের সংগঠনের যোগ মহোৎসবকে তারই প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে বিজেপি। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যান রামদেব। যোগ মহোৎসবে যোগী আদিত্যনাথের পাশেও ছিলেন তিনি।
0 comments:
Post a Comment